ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ সীমান্ত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে দুই দেশেই সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সম্প্রতি কাশ্মীর উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) সংলগ্ন একাধিক এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ও অনুপ্রবেশ চেষ্টার অভিযোগ ঘিরে এই সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উভয় দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা ও রাজৌরি জেলায় একাধিকবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দিক থেকে হওয়া ‘অনির্ধারিত’ গুলি বর্ষণে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (BSF) দুই সদস্য আহত হন বলে জানানো হয়েছে।
উল্টো দিকে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতীয় পক্ষের 'উসকানিমূলক আচরণ' এবং 'অপ্রয়োজনীয় সামরিক মোতায়েন' এর অভিযোগ এনেছে। ইসলামাবাদ এক বিবৃতিতে বলেছে, “শান্তি বজায় রাখার প্রতিশ্রুতির প্রতি ভারত যেন প্রতিনিয়ত অবহেলা করছে, যা অঞ্চলজুড়ে স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলছে।”
দুই দেশের রাজধানীতেও কূটনৈতিক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে স্পষ্ট যে পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে থাকলেও তা অত্যন্ত জটিল এবং সংবেদনশীল পর্যায়ে পৌঁছেছে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, “আমরা শান্তি চাই, তবে দেশের সার্বভৌমত্ব ও সুরক্ষার প্রশ্নে কোনও আপোস সম্ভব নয়।”
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরও এক বিবৃতিতে বলেছে, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করা, যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়।”
সীমান্তবর্তী অঞ্চলের গ্রামগুলোতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিয়েছে। স্কুল, হাট-বাজার এবং প্রশাসনিক কার্যালয়গুলোতে সীমিত কার্যক্রম চললেও মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে।
জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে বলেন, “ভারত ও পাকিস্তানকে বর্তমান উত্তেজনা হ্রাস করতে অবিলম্বে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসার আহ্বান জানাচ্ছি।"